দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে মেধাবী সম্ভাবনাময় ও সুবিধাবঞ্চিত সাঁতারুদের খুঁজে বের করতে ট্যালেন্ট হান্ট প্রোগ্রাম শুরু করছে বাংলাদেশ সাঁতার ফেডারেশন। ২০১৬ গুয়াহাটি এসএ গেমসের পর সাঁতারে বাংলাদেশ আর কোনও সোনা জেতেনি। সেই খরা কাটাতে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে আবারও নতুন করে ‘সেরা সাঁতারুর খোঁজে বাংলাদেশ’ কর্মসূচি শুরু করেছে ফেডারেশন। তৃণমূল থেকে সাঁতারু তুলে আনার এই কর্মসূচি ফেডারেশন সর্বশেষ আয়োজন করেছিল ২০১৬ সালে। এখান থেকে বাছাইকৃত সাঁতারুদের দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ দেওয়াই ফেডারেশনের উদ্দেশ্য। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) অডিটোরিয়ামে সাঁতার ফেডারেশন সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। মূলত দেশের ৮টি বিভাগের ৬৪টি জেলা থেকে আসা সাঁতারুদের নিয়ে ১৫টি ভেন্যুতে চলবে এই বাছাই কার্যক্রম। ১০ মে মিরপুর সুইমিং কমপ্লেক্স থেকে শুরু হবে এই কর্মসূচি। এ দিন বাছাই কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
বাছাই প্রক্রিয়া চলবে তিন ধাপে। যেখানে সারা দেশ থেকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হবে ৬০০ সাঁতারু। এরপর ঢাকায় হবে দ্বিতীয় পর্যায়ের বাছাই। সেখানে ৬০০ থেকে সাঁতারু কমিয়ে আনা হবে ১০০ জনে। সর্বশেষ তৃতীয় ধাপে চূড়ান্ত বাছাই করা হবে ৫০ জন সাঁতারুকে। চূড়ান্ত পর্যায়ের এই বাছাইকৃত সাঁতারুদের দুই বছরের জন্য দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। বয়সভিত্তিক ‘ক’ গ্রুপে ৯-১১ বছর বয়সী সাঁতারুরা অংশ নেবে। ১২-১৫ বছর বয়সী সাঁতারুরা অংশ নেবে ‘খ’ গ্রুপে। ফ্রি স্টাইল ও নিজের পছন্দের কোনও ইভেন্টে সাঁতারে অংশ নিতে পারবে প্রতিযোগীরা। প্রথম ধাপে প্রতিটি উপজেলা থেকে বাছাই করা হবে। এরপর জেলা পর্যায়ে নেয়া হবে ৬০০ জনকে। দ্বিতীয় পর্বে ঢাকায় থাকবে ১০০ জন। এরপর সেখান থেকে যে ৫০ জন চূড়ান্তভাবে টিকে যাবে তাদের নিয়েই চলবে প্রশিক্ষণ।
এসএ গেমসে সোনাজয়ী সাঁতারু শাহজাহান আলী রনি, মাহফুজা খাতুন শিলা, জুয়েল আহমেদসহ ফেডারেশনের কোচেরা এই বাছাই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। এই কর্মসূচি নিয়ে দারুণ আশাবাদী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুবুর রহমান শাহীন। বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি সেটাই বললেন, ‘আমরা ১০ মে থেকে ট্যালেন্ট হান্ট প্রোগ্রামটি শুরু করতে যাচ্ছি। প্রাইম ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায়, বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর সহযোগিতায় এবং বিশেষ করে আমাদের সম্মানিত সভাপতি যার অক্লান্ত পরিশ্রমে ট্যালেন্ট হান্ট প্রোগ্রামকে এগিয়ে নিতে পারছি। আশা করি এই ট্যালেন্ট হান্টের মাধ্যমে আমাদের সাঁতারে যে ক্রাইসিস চলছে সেই সময়টুকু থেকে আমরা বের হয়ে আসতে পারবো।’
একই সঙ্গে তিনি দেশের প্রতিটি পরিবারের সদস্যদের সন্তানদের সাঁতারে আসতে উদ্বুদ্ধ করেছেন, ‘আমি দেশবাসীকে অনুরোধ করবো আপনাদের সন্তানকে ঘরে বসিয়ে রাখবেন না। মাদকের ভয়াল থাবা থেকে সুরক্ষা দিতে খেলাধুলার বিকল্প নেই।’ বাছাই করে মিশরের কোচ দিয়ে প্রশিক্ষণেরও কথা রয়েছে। ‘সেরা সাঁতারুর খোঁজে বাংলাদেশ’ কর্মসূচির জন্য বাজেট ধরা হয়েছে ৬ কোটি। এরই মধ্যে প্রাইম ব্যাংক পিএলসি ৫০ লাখ টাকা দিয়েছে সাঁতার ফেডারেশনকে। প্রাইম ব্যাংক থেকে আরও সহযোগিতা পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান প্রাইম ব্যাংকের হেড অব ব্র্যান্ড অ্যান্ড কমিউনিকেশন সৈয়দ রায়হান তারেক, ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক নিবেদিতা দাস ও কোষাধ্যক্ষ মেজর (অব:) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান।