আগামী বছর ২৩ থেকে ৩১ জানুয়ারি পাকিস্তানের তিন শহর লাহোর, ইসলামাবাদ ও ফয়সালাবাদে হওয়ার কথা দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমস। শুরু হতে বাকি তিন মাসেরও কম সময়। অথচ গেমস হওয়ার কোনো আলামত নেই। এরই মধ্যে বাতাসে খবর ভাসছে, নির্ধারিত এই সময়ে গেমস হবে না। সেই আশঙ্কা থেকে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি ফেডারেশন তাদের ট্রেনিং ক্যাম্প স্থগিত করে দিয়েছে। শোনা যাচ্ছে আরো কয়েকটি ফেডারেশন সেই পথে হাঁটছে। একদিকে গেমসের অনিশ্চয়তা। অন্যদিকে অর্থ সংকট। এক সময় আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ট্রেনিং হতো বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের অধীনে। তবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের আইন বলছে, ট্রেনিং পরিচালনার এখতিয়ার কেবল তাদেরই। টাকা দেবে সরকার, ট্রেনিং তদারিকিও করবে সরকার। দীর্ঘদিন ধরে আইনের এই ব্যত্যয় ঘটিয়ে আসছিল বিওএ। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদেরও কেনো হেলদোল ছিল না। এই এসএ গেমস থেকে ট্রেনিংয়ের তদারকি হচ্ছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মাধ্যমে।
আগামী এসএ গেমসে বাংলাদেশের অংশ নেয়ার কথা ২৬ ডিসিপ্লিনে। ডিসিপ্লিনগুলো হলো-আরচারি, অ্যাথলেটিকস, ব্যাডমিন্টন, বাস্কেটবল, বক্সিং, ক্রিকেট, ফেন্সিং, ফুটবল. গলফ, হ্যান্ডবল, হকি, জুডো, কাবাডি, কারাতে, শুটিং, স্কোয়াশ, সাঁতার, টেবিল টেনিস, তায়কোয়ান্দো, টেনিস, ভলিবল, ভারোত্তোলন, কুস্তি, উশু, রাগবি এবং বিলিয়ার্ড অ্যান্ড স্নুকার। অনুশীলনের জন্য কয়েকটি ফেডারেশন বিদেশি কোচ এনেছিল। কয়েকটি ফেডারেশন বিদেশি কোচ বিদায়ও করে দিয়েছে। উশু, পুরুষ কাবাডি, বক্সিং, ব্যাডমিন্টনসহ অনেক ফেডারেশন এরই মধ্যে অনুশীলন বন্ধ করে দিয়েছে। আগামী এক-দুই দিনের মধ্যে কয়েকটি ফেডারেশন সভা করে সিদ্ধান্ত নেবে। গেমসের আয়োজক কমিটি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত কিছু বলেনি। বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) হয়তো নভেম্বর মাস দেখবে। তারপর সিদ্ধান্ত তবে। হবে কি হবে না-এই অনিশ্চয়তার কারণে এক এক করে ফেডারেশন স্থগিত করছে অনুশীলন, বিদায় করে দিচ্ছে বিদেশি কোচ।
যদিও যাদের নেতৃত্বে ও অর্থায়নে এই অনুশীলন ক্যাম্প চলছিল সেই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ফেডারেশনগুলোকে ক্যাম্প বন্ধের নির্দেশনা দেয়নি। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক (ক্রীড়া) মোহাম্মদ আমিনুল এহসান শনিবার বলেছেন, কোনো ফেডারেশনকে ক্যাম্প বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়নি।কিছু ফেডারেশনের ক্যাম্প বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এই পরিচালক বলেছেন, কোনো ফেডারেশন যদি ক্যাম্প বন্ধ করে থাকে,সেটা তাদের নিজ ইচ্ছায়। আমাদের পক্ষ থেকে কাউকে অনুশীলন বন্ধ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।বাস্তবতা হলো, যে সব ফেডারেশন অনুশীলন শুরু করেছিল, তারা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ পাচ্ছিল না। তাই কষ্ট করেই ট্রেনিংটা চালিয়ে যাচ্ছিল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের আশ্বাসের ভিত্তিতে। গেমস হবে না-এমন আশঙ্কা থেকেই ফেডারেশনগুলো তড়িঘড়ি করে ক্যাম্প বন্ধ করে দিচ্ছে।