রিয়াদ থেকে কামরুজ্জামান হিরু : ইসলামিক সলিডারিটি গেমসের সপ্তম দিনে টেবিল টেনিস থেকে বড় সাফল্য পেল বাংলাদেশ দল। ফাইনালে তুরস্কের কাছে হেরে প্রথমবারেরেমত টেবিল টেনিসে রৌপ্য পদক জিতে ইতিহাস গড়লো জাবেদ-খই খই জুটি। অতীতে ইসলামি গেমসের মত বড় আসরে পদক জয়ের কোন রেকর্ড ছিল না টেবিল টেনিসে বাংলাদেশ দলের।
বৃহস্পতিবার মিশ্র দ্বৈতের ফাইনালে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ তুরস্কের কাছে ৩-০ সেটে হেরে গেছে বাংলাদেশ।
এর আগে একই দিন সকালে অনুষ্ঠিত সেমিফাইনালে বাহরাইনকে হারিয়ে রৌপ্য পদক নিশ্চিত করেছে।
সৌদি ই স্পোর্টস কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ টেবিল টেনিস দলের মোঃ জাবেদ আহমেদ ও খৈ খৈ সাই মারমা জুটি মিশ্র দৈত্বের সেমিফাইনালের খেলায় বাহারাইনের কেন্দা মোহাম্মদ ও রাশেদকে ৩- ১ সেটে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছে বাংলাদেশ । একইসঙ্গে গেমসে রৌপ্য পদকও কনফার্ম করে নেয় বাংলাদেশ । এর আগে একই ভ্যানূতে অনুষ্ঠিত কোয়ার্টার ফাইনালে তারা ৩-০ সেটে হারিয়েছিল মালদ্বীপের মুন্সেফ ও রাফা জুটিকে।
সেমিফাইনালে জয়ের পর আনন্দে আত্মহারা বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড় খই খই সাই মারমা বলেন, এত বড় আসরে খেলার অভিজ্ঞতা আগে ছিল না।আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলার অভিজ্ঞতা থাকলেও গেমসে খেলার অভিজ্ঞতা এটাই প্রথম। আগে কখনো পদক ছিলনা তাই খুব বড় আশা নিয়ে আমরা এখানে আসিনি। তাই অনেকটা ভয়ে ভয়ে কেটেছে, তবে আত্মবিশ্বাস ছিল ভালো কিছু করার।আার এতেই সফলতা এসেছে। গত আসরে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত খেলেছিল বাংলাদেশ দল, তাই এবার ও প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করা। তারপর ধাপে ধাপে এগিয়ে যাওয়া। আর এতেই সফলতা এসেছে। ফাইনালে তুরস্ক শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হওয়ায় ওদের বিপক্ষে জয় পাওয়া হয়নি বাংলাদেশের।
দলের অপর খেলোয়াড় জাবেদ বললেন, এটা আমার ক্যারিয়ারের সেরা সাফল্য।বাহরাইনের বিপক্ষে জয় পাওয়াটা সহজ ছিল না। যথেষ্ট পরিকল্পনা করতে খেলতে হয়েছে। ম্যাচ বাই ম্যাচ প্লান করে আমরা খেলেছি। এতে সফলতা এসেছে। টেবিল টেনিসের ইতিহাসে এটা অনেক বড় অর্জন।যার অংশ হতে পেরে খুবই ভালো লাগছে, এ আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। আমরা এখানে আসার আগে ভাবনায় ছিল না আমরা ফাইনালে খেলতে পারবো।আল্লাহর অশেষ রহমতে ফাইনালে যেহেতু এসেছি তখন সেরাটাই পেতে চেষ্টা থাকবে।
ফাইনালে প্রতিপক্ষ তুরস্ক আমাদের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে থাকায় আমরা লড়াইটা করতে পারিনি।
উল্লেখ্য, রিয়াদ ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে প্রথম পদকটি আসে ভরোত্তোলনে।
প্রথমবারের মতো ভারত্তোলনে বাংলাদেশকে তিনটি পদক এনে দিয়েছেন মারজিয়া আক্তার ইকরা। বাংলাদেশের এই ক্রীড়াবিদ অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করেছেন। ৫৩ কেজি ওজন শ্রেণির প্রতিযোগিতায় তিনি স্নাচ, ক্লিন এন্ড জার্ক ও দলগত বিভাগে ব্রোঞ্জ পদক জিতেছেন। ফলে একাই দেশকে এনে দিলেন তিনটি পদক।
এদিকে সাফল্য ছাড়াই দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ কারাত দল। বুধবার অনুষ্ঠিত খেলাগুলোতে জয় পায়নি বাংলাদেশ দল। মহিলা বিভাগে হুমায়রা আক্তার অন্তরা, রাবেয়া সুলতানা মিম, ও পুরুষ বিভাগে আনোয়ার নাইম আশানুরূপ সাফল্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছেন। এদিকে বাংলাদেশ উশু দল বুধবার রিয়াদ এসে পৌচ্ছেছে।গতকাল দলের সদস্যরা হালকা অনুশীলন করেছে।
সৌদি আরবে বাংলাদেশ টিমকে ভিডিও কল করে বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ক্যাপ্টেন মাকসুদ আহমেদ সনেট শুভেচ্ছা জানান। পাশাপাশি দলকে উৎসাহিত করতে মিক্সড ডবলস্ দলের খেলোয়াড় মোঃ জাভেদ আহমেদ এবং খই খই খাই সাই মারমাকে বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশনের পক্ষ রৌপ্য জয়লাভ করায় ৫০ হাজার টাকা করে মোট ১ লাখ টাকা পুরুস্কারের ঘোষণা দেন। এছাড়া বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী তিন লক্ষ টাকা আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করেছে।