এসএ গেমস দুই বছর পিছিয়ে যাওয়ায় চুক্তি শেষ হওয়ার দুই মাস আগেই বাংলাদেশ সাঁতারের মিশরীয় কোচ সাঈদ ম্যাকডি দেশে ফিরে যাচ্ছেন। আজ বুধবার তিনি ঢাকা থেকে মিশরের উদ্দেশে রওনা হবেন বলে জানা গেছে। জানুয়ারি পর্যন্ত তার সঙ্গে চুক্তি থাকলেও দুই মাস আগে যাওয়ার কারণ প্রসঙ্গে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শাহীন বলেন, মূলত আর্থিক কারণেই তাঁর মত দক্ষ একজন কোচকে ছাড়তে হচ্ছে। বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) অর্থায়নে পাকিস্তানে অনুষ্ঠেয় এস এ গেমসকে লক্ষ্য করে আনা হয়েছিল। কিন্তু গেমস অনিশ্চিত হওয়ায় তাকে আর রাখা যাচ্ছেনা। তিনি বলেন, যদিও ‘বাংলাদেশের সাঁতারের জন্য তার খুবই প্রয়োজন ছিল। অল্প সময়ের মধ্যে তিনি সাঁতারু ও বাংলাদেশি কোচদের উন্নয়ন ঘটিয়েছেন। প্রতি মাসে তার বেতন সাড়ে তিন হাজার ডলার ও খাবারের পেছনে আরো লাখ খানেক ব্যয়। অলিম্পিকের অর্থায়নে কয়েক মাসের বেতন দেয়া হয়েছে। খাবারের ব্যয় আমরা বহন করতাম। সামনে কোনো গেমস না থাকায় তাকে দীর্ঘমেয়াদে রাখা আমাদের পক্ষে সম্ভব হলোনা। এজন্য বাধ্য হয়েই তাকে বিদায় জানাতে হচ্ছে। যা সাঁতারের জন্য ক্ষতিই। কিন্তু আমাদের সাধ থাকলেও সাধ্য নেই।’
সাঈদ আসার পর বাংলাদেশের সাঁতারুদের উন্নতি হয়েছে। সদ্য সমাপ্ত জাতীয় সাঁতারে হয়েছিল বিশটি রেকর্ড। এত রেকর্ড সাম্প্রতিক সময়ে হয়নি। সাঈদের ছোঁয়ায় বদলে গেছে চিত্র। তার বিদায়কে দেশের সাঁতারের জন্য নেতিবাচক মনে করছেন সেরা পুরুষ সাঁতারু সামিউল ইসলাম রাফি।তিনি বলেন, ‘আমি থাইল্যান্ডে উন্নত ট্রেনিং করেছি বিশ্ব সাঁতারের বৃত্তিতে। সেখান থেকে দেশে আসার পর উনার ট্রেনিংয়ে আমার উন্নতি হয়েছে। তিনি অত্যন্ত ভালো মানের কোচ। শুধু আমার নয়, আরো সাঁতারুদের পারফরম্যান্সে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছিল। জাতীয় সাঁতারে বিশটি রেকর্ড কখনো আগে হয়নি, এটা তার জন্যই হয়েছিল। তিনি দীর্ঘমেয়াদে থাকলে সাঁতারের জন্যই ভালো হতো।’ এসএ গেমসে স্বর্ণজয়ী সাঁতারু মাহফুজা খাতুন শিলা ছিলেন সাঈদের সহকারী কোচ। মিশরীয় কোচকে নিয়ে তার পর্যবেক্ষণ, ‘জাতীয় সাঁতারের ফলাফলই প্রমাণ করে তিনি ভালো মানের কোচ। খেলোয়াড়দের চেয়েও কোচকে ডিসিপ্লিন হতে হয়। এটা খুব কাছ থেকে দেখেছি। কোন দিন কী প্র্যাকটিস শিডিউল, সেটার বাস্তবিক ও টেকনিক্যাল ব্যাখ্যাও তার কাছ থেকে পেয়েছি।’ বাংলাদেশ ছাড়ার আগে সাঈদ তার চার মাসের মূল্যায়ন করলেন এভাবে, ‘২০১৯ সালের পর থেকে বাংলাদেশের সাঁতারুরা উন্নত ট্রেনিং সেভাবে পায়নি। আমার চার মাসের অনুশীলনে সাঁতারুদের টাইমিংয়ে উন্নতি হয়েছে। সেটার প্রমাণ ফলাফলেই। ফেডারেশনের প্রতি অনুরোধ যেন নিয়মিত অনুশীলন বজায় রাখে, না হলে চার মাসের উন্নতির ধারাবাহিকতা থাকবে না। বাংলাদেশের সাঁতারুদের সামর্থ্য ও যোগ্যতা রয়েছে, প্রয়োজন নিয়মিত অনুশীলন ও ভালো কোচিং।’