বিশ্বকাপজয়ী দলের অন্যতম সাহসী সেনানী জেনারো গাত্তুসো এখন কোচের ভূমিকায়। টানা দুই বিশ্বকাপে অনুপস্থিত ইতালিকে ফিরিয়ে আনাই তার সামনে সবচেয়ে বড় মিশন।
২০০৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ের স্মৃতি এখনো জ্বলজ্বলে। মধ্যমাঠে এক দুর্ভেদ্য প্রাচীরের নাম ছিল জেনারো গাত্তুসো। সেই রণক্ষেত্রের যোদ্ধা এখন কোচের আসনে—ইতালির জাতীয় দলের ডাগআউটে।
নরওয়ের কাছে হারের পর লুসিয়ানো স্পালেত্তির বিদায় অনেকটাই সময়ের ব্যাপার ছিল। তবে তার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে যে নামটি চূড়ান্ত হলো, তা বিস্ময়ের না হলেও প্রত্যাশার। ইতালিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (FIGC) নিশ্চিত করেছে, নতুন কোচ হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন গাত্তুসো।
ঘোষণাটি দিয়েছেন ২০০৬ বিশ্বজয়ী আরেক নায়ক ও বর্তমান FIGC হেড অব ডেলিগেশন জিয়ানলুইজি বুফন নিজেই। অনূর্ধ্ব-২১ ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, “দিনের শেষে আমরা সেরা পছন্দটাই করেছি।”
ইতালি টানা দুই বিশ্বকাপে অনুপস্থিত। এক সময়ের চারবারের বিশ্বজয়ীরা এখন নিজেদের প্রমাণ করতে মরিয়া। এমন এক সময়েই গাত্তুসোকে এই দায়িত্ব দেওয়া হলো।
কোচ হিসেবে তার অতীত মিশ্র। নাপোলিকে ১২ বছর পর কোপা ইতালিয়া শিরোপা এনে দিয়েছিলেন, যা তার একমাত্র বড় সাফল্য। এর বাইরে ভ্যালেন্সিয়া, এসি মিলান, মার্সেই, ফিওরেন্টিনা ও সর্বশেষ হাজুক স্পিলট—সবার সাথেই ছিল ছোট ছোট অধ্যায়।
তবে খেলার মাঠে গাত্তুসোর আগ্রাসী মনোভাব, আত্মত্যাগ ও প্যাশনের জন্য তিনি বিখ্যাত। এখন সেই চরিত্রই কি ডাগআউটেও প্রভাব ফেলবে?
প্রথমে FIGC-এর চোখ ছিল কোচিং কিংবদন্তি ক্লডিও রানেইরির দিকে। কিন্তু ৭৩ বছর বয়সী এই কোচ রোমার সিনিয়র উপদেষ্টা হিসেবে থেকে যেতে চান বলে জানিয়ে দেন, ফলে পরিকল্পনায় আসে পরিবর্তন।
গাত্তুসোর সাথে FIGC-এর চুক্তির শর্তাবলি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ হয়নি। তবে বিভিন্ন সূত্র বলছে, ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব পেরোনোর ওপরই নির্ভর করবে তার ভবিষ্যৎ।
একাধিক সূত্রের মতে, ফেডারেশন গাত্তুসোর মধ্যমাঠ থেকে খেলা গড়ার দক্ষতা, কঠোর নেতৃত্বগুণ ও তরুণ খেলোয়াড়দের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দিয়েছে।
গাত্তুসো নিজেও বলেছেন, “ইতালির হয়ে খেলাটাই আমার জীবনের বড় গর্ব, এবার কোচ হিসেবে সেটা ফিরিয়ে দিতে চাই।”
ইতালির ডাগআউটে এখন আগুনে এক মনোভাব। মাঠের লড়াকু গাত্তুসো এখন কৌশলের খেলোয়াড়। তার প্রথম পরীক্ষা হবে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের পরবর্তী ম্যাচগুলোয়। দেখার বিষয়, মাঠে তার আগ্রাসী সত্তা কি এবার ইতালিকে বিশ্বমঞ্চে ফিরিয়ে আনতে পারবে?